History 

পদ্মা যমুনার পলিমাটির আবাহনে বাধা পাবনার ভূখন্ড ইতিহাসের নানা আকরে সমৃদ্ধ। এখানকার মানুষের জীবন আর জীবনের শিল্পকর্ম সময়ের যে বিচিত্র স্বরলিপিতে গাঁথা তার উৎস সন্ধানে আমাদেরকে ফিরে যেতে হয় অতীত বলয়ে। জীবন রথের চাকা মহাকালের পথ দিয়ে এগিয়ে চলেছে সম্মুখে কিন্তু তার কীর্তি, স্মৃতিচিহ্ন মুখ গুজে পরে আছে অতীত বিবরে। অনন্তকালের নীলাকাশের ছাউনীতলে ইছামতির তীরে গড়ে ওঠা এই পাবনা শহর ও জেলা পাবনার রুপের অনেক ঋতুবদল হয়েছে, হয়েছে জীবনানয়নের নবতর জন্মতিথি। খুব বেশী দিনের না হলেও এক শতকের উর্ধের ইতিহাসে চোখ রাখলে দেখি, মাথার ওপরের সেই নীলাকাশ তেমনি আছে। বদলে গেছে কেবল এখানকার জীবনোপায়ের চিন্তাধারার ইতিহাস। এ ইতিহাসেও সব ইতিহাস নেই- কিছু আছে স্মৃতি, কিছু আছে স্মৃতিতে।

পাবনা নামে জেলা প্রতিষ্ঠার ৬১ বছর পর ১৮৯০ থেকে আজ পর্যন্ত- প্রায় সোয়াশ’ বছর বলয়ে ঝিরিঝিরি নারকেল পাতার ছাউনীতলের রূপশ্রীমন্ডিত এই পাবনা শহরের জন জীবনের বৈচিত্রের ইতিহাস সন্ধান আমাদেরকে কতোভাবে ভাবিত করে। ইতিহাসের জানালায় মুখ রাখলে দেখা যায়, পাবনা শহরের প্রাণকেন্দ্রে আব্দুল হামিদ সড়কের পূর্বদিকে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ‘ অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরী’। এই সময়ের সিঁড়িতে পা রেখে সমকালীন মানুষের জীবন ও কীর্তিকথা ভাবতে মনে প্রার্থনা জাগে ‘ আমারে ফিরায়ে লহ সেই সর্বমাঝে।’ নানা স্মৃতি স্মারকের মুখোমুখি দাঁড়ালে ভেতর থেকে কে যেন বলে ওঠেঃ ‘দাড়াও পথিকবর.............তিষ্ঠ ক্ষণকাল।’

পাবনা জেলার কীর্তিমান জমিদার তাঁতিবন্দের চৌধুরী বংশ। চাটমোহরের বোঁথড় গ্রামে ছিলো তাঁদের আদি বাসস্থান। আর তখন এঁদের উপাধি ছিলো সান্যাল। একসময় দারিদ্রের তাড়নায় এই বংশের পূর্ব পুরুষ রাধাবল্লভ চাটমোহর থেকে সুজানগর উপজেলার চন্ডীপুরে এসে বাস করতে থাকেন। তারপর তাঁতিবন্দের ব্রাম্মনদের সাহায্য সহযোগিতায় তিনি এখানে এসে স্থায়ী আবাস গড়েন। রাধাবল্লভ বাবুর এক পুত্র উপেন্দ্রনারায়ণ সে সময় বাংলা ও উর্দুতে ব্যুৎপত্তি লাভ করে নাটোর কালেক্টরীর সেরেস্তাদার পদে এবং দুলাইয়ের রহিমউদ্দিন চৌধুরী সেখানকার পেস্কার পদে নিযুক্ত হন। (উনিশ শতকের প্রারম্ভে সেরেস্তাদাররা পুলিশ বিভাগেও সর্বপ্রধান কর্মচারী ছিলেন। রাজশাহী বিভাগের সার্কিট কোর্টের তৃতীয় জজ মিঃ ষ্টেচীর ১৮০৮ খিস্টাব্দের ১০ জুনের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ফৌজদারী সেরেস্তাদার ও পেস্কারের ভগ্যের উন্নয়ন ঘটে)।

উপেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীই প্রকৃতপক্ষে তাঁতিবন্দের জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর পুত্র ও পৌত্র যথাক্রমে গঙ্গা গোবিন্দ চৌধুরী এবং গুরু গোবিন্দ চৌধুরী তাঁতিবন্দের ভবানীপুরের নন্দী ও হেমরাজপুরের সরকার উপাধিক কায়স্থ জমিদারের স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করেন। গঙ্গা গোবিন্দ চৌধুরী মহাশয়ের তিন পুত্রের মধ্যেই প্রথম জমিদারী বন্টন শুরু হয়। তাঁতিবন্দের জমিদার গঙ্গা গোবিন্দ চৌধুরীর তিন পুত্র। গুরু গোবিন্দ, দূর্গা গোবিন্দ এবং বরদা গোবিন্দ। দ্বিতীয় পক্ষের পুত্র বরদা গোবিন্দ চৌধুরীর সময়কালে (উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে জীবিত ছিলেন) এই বংশের যথেষ্ঠ উন্নতি হয়েছিলো। বরদা গোবিন্দ চৌধুরী ও দূর্গা গোবিন্দ চৌধুরী ছিলেন নিঃসন্তান। এদের বিধবা পত্নী যথাক্রমে চন্দ্রমণি ও মনমোহনী দেব্যাদের মধ্যে এবং তাদের গৃহীত দত্তকদের মধ্যে মামলা মোকদ্দমায় জমিদার বংশের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জমিদার বরদা গোবিন্দ চৌধুরীর দত্তক পুত্র অন্নদা গোবিন্দ চৌধুরী মহাশয় নিজের নামানুসারে পাবনা শহরে ১৮৯০ খ্রীষ্টাব্দে অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করে কালের ইতিহাস এক অক্ষয় সেতু বেঁথে দিয়েছেন। মতান্তরে এ কথাও জানা যায় শ্রীযুক্ত জ্ঞানদা গোবিন্দ চৌধুরী পিতার পুণ্যস্মৃতি রক্ষার্থে ১৮৮৯ খ্রীষ্টাব্দে লাইব্রেরী নির্মাণের জন্য অর্থ দান করেন। মতান্তরে যাই থাকুক, অন্নদা গোবিন্দ চৌধুরীর পুত্র শ্রী জ্ঞানদা গোবিন্দ চৌধুরী এ পাঠাগারকে আরো বড় করে তুলেছিলেন। ১৮৯০ খিষ্টাব্দে ভাইসরয় লর্ড ল্যান্স ডাইনের (১৮৮৮-৯৪) রাজত্বকালে জ্ঞানের ভুবন এই অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরীর দ্বারোদঘাটনের কথা আজো সরব ভাষায় সবার কন্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে। শ্রদ্ধেয় অন্নদা গোবিন্দ চৌধুরীর কীর্তি আজো জেগে আছে।

অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠাকালের পূর্বে এ জেলার কোথাও পাঠাগার স্থাপিত হলেও একমাত্র এই পাঠাগারের মহিমাই আজো প্রোজ্জ্বল স্বাক্ষরে অনন্য। এই পাঠাগারের জন্মকালে পৌরসভার বয়স ছিল মাত্র চৌদ্দ বছর। তখন ইছামতির জল প্লাবনে এ শহরের ৫/৬ মাইল পাকা রাস্তা ভেঙ্গে যায়। বাজিতপুর ঘাটে তখন স্টিমার ভেড়ে। ত্রিশোত্তর বয়সের তরুণ কবি রবীন্দ্রনাথের বোট ভাসে সেখানে। এক টাকায় যখন চাল মিলতো তেরো সের তখন সেই ১৮৯০ খ্রীষ্টাব্দের পাবনা শহরে অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্ররী আর অস্ট্রেলীয় শিনারী গির্জা গড়ে ওঠে। মাত্র পাঁচ বর্গ মাইলের সেদিনের পাবনা পৌর এলাকার সুধীজনের একমাত্র আকর্ষনীয় জ্ঞানপীঠ ছিল এই অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্ররী। সেদিনের রোকনপুর পরগণায় (বর্তমানে গোপালপুর মৌজা) তেরো শতাংশ জমির উপর দু’ কক্ষের (প্রথম কক্ষ ১৫’ ৬” X ২৯ দ্বিতীয় কক্ষ ১৪’ ৬” X ২৯’) একটি অট্রালিকায় লাইব্রেরীর জয়যাত্রা শুরু হয়। এই তেরো শতাংশ জমিতে দালান ঘরের পাশেই ছিলো একটি টিনের ঘর । ৮ ডি. এস. খতিয়ান থেকে জানা যায়, লাইব্রেরীর প্রথম সম্পাদক শ্রীসীতানাথ অধিকারীই হলেন এর দখলদার। জেলা প্রশাসকের রেকর্ডরুমের কাগজপত্র দেখে জানা যায়, তখন এ জমি ছিলো নিস্কর। লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত সিদ্ধান্তে উল্লেখ আছে, ১৯৩৪ থেকে খাসমহলে (তাড়াশ বিল্ডিং) এক টাকা খাজনা দিতে হতো। পাবনা পৌরভুমি কার্যালয় হতে জানা যায়, ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ থেকে প্রতি শতাংশ ১.৫০ হিসাবে ১৩ শতাংশের জন্যে প্রথম ১৯.৫০ লাইব্রেরীর ভুমিকর ধার্য করা হলো। পরবর্তিতে ১৮৯০ খ্রীষ্টাব্দ লাইব্রেরীর জয়যাত্রার ইতিহাস থেকে ১৯২৩ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় সিকি শতাব্দির লাইব্রেরীর প্রামাণ্য ইতিহাস রচনার কাগজ কালের বিবরে বিলীন হয়ে গেছে। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মিঃ ডি. এইচ. লীস দ্বারা উদ্বোধিত রিডিং রুম ১৭’ ৮’’ X ২৭’ আয়তনের খিলান দেওয়া ছাদের একতলা ভবনটি। এর নির্মানকর্মও ছিল প্রায় শতাব্দী কাল আগের। সেদিন লাইব্রেরীর জন্মলগ্নে পাবনা জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট কালেক্টর মিঃ এফ. বীজ পদাধিকার বলে (খুব সম্ভবত) এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন। তাঁতিবন্দের চৌধুরী বংশের রাজভক্তি দেখে একথা অনুমান করাটা সঙ্গত বলে মনে হয়।

এই জমিদার বংশের অনেকেই ছিলেন কবি সাহিত্যিক। এদের বই পত্র দানের পাশাপাশি আরো কিছু বিদ্যানুরাগী পন্ডিতজনের দানের পুস্তক সম্ভারে রচিত হলো এর পুস্তক সাম্রাজ্যের পথিকৃত সূচিপত্রখানি। লাইব্রেরীর জন্মকাল থেকে এখন পর্যন্ত এদানের নমুনা এবং এর ধারা এখনো অব্যহত রয়েছে। কিছু বাংলা, কিছু সংস্কৃতি আর ফারসি কেতাব নিয়ে শুরু হয় এর পথ পরিক্রমা। তখনকার লাইব্রেরীর বাংলা সাহিত্যের সূচিপত্রের রাজা রামমোহন, অক্ষয় কুমার দত্ত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর , প্যারীচাঁদ মিত্র, কালী প্রসন্ন, মেহেরুল্লাহ সিংহ, গিরিশচন্দ্র সেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত , রঙ্গলাল সেন, মুধুসুদন দত্ত, হেমনবীন চন্দ্র, বিহারীলাল, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুরেন্দ্রনাথ মজুমদার, দেবেন্দ্রনাথ সেন, অক্ষয় কুমার বড়াল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র, স্বর্ণকুমারী দেবী, কামিনী রায়, মান কুমারী বসু, রজনীকান্ত সেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, শেখ ফজলুল করিম, অমৃতলাল বসু, গিরিশচন্দ্র ঘোষ, ক্ষীরোদা প্রসাদ বিদ্যাবিনোদ প্রমুখের কিছু কিছু রচনাসম্ভার ঠাঁই পায়। এছাড়া আরো শতশত লেখকের হাজার হাজার বই এর সম্ভারে লাইব্রেরী ভরপুর হতে থাকে। যার ধারাবাহিকতা বর্তমানেও রয়েছে।

উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে এবং বহু পুরাতনের কারণে, উপযুক্তভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলা দেশের সংস্কৃতি ধারার বিপরীত স্রোতের অনুসারী কতিপয় ব্যক্তিদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থের কারণে লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাকাল থেকে যে সমস্ত কাগজপত্র বিনষ্ট হয়ে গেছে তার ফলে আমরা এ জেলার সাংস্কৃতিক জগতের কিছু সময়ের চেতনার ইতিহাসের প্রত্যক্ষ পরিচয় থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এ কথা বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে না, লাইব্রেরীর সঙ্গে জাতীয় চেতনা স্পন্দন অবিচ্ছেদ্য সূত্রেই গ্রথিত।

১৯২৮ এর ৮ জুলাই’র এর অধিবেশনে (All Bengal Library Association) এর মেম্বর শ্রেণীভুক্ত হবার প্রস্তাব গৃহীত হয়। অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরীতেও এই সমিতির শাখ খোলা হয়। এই সময় লাইব্রেরীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো এবং পাবনার শিক্ষিত জনগনের কাছ থেকে সাহায্য প্রাপ্তি প্রত্যাশায় ১০০০ কপি আবেদন মুদ্রণের ব্যবস্থা গৃহীত হয়। তখনও পাবনায় বিদ্যুৎ আসেনি। পাঠকরা লাইব্রেরীর তেরো টাকা আট আনা মূল্যের পেট্রোম্যাক্স লাইটে পড়াশুনা করতো। সর্বমোট একশত টাকা ব্যয়ে লাইব্রেরীতে বিদ্যুৎ এলো ১৯৩৬ এর ডিসেম্বরে। মোট ১২টি পয়েন্ট ওয়্যারিং এর কাজ সম্পন্ন করার জন্যে ভৌমিক ইলেকট্রিক কোম্পানীকে দায়িত্ব দেওয়া হলো। এই বিদ্যুৎ যেনো লাইব্রেরীর কর্মোদ্যম বাড়িয়ে দিলো। ১৯৩৭ এ লাইব্রেরীর সম্পাদক শ্রীরবীন্দ্রনাথ ভট্রাচার্য এর সঙ্গে শ্রীযতীন্দ্রনাথ রায় ও পূর্ণচন্দ্র রায় দায়িত্ব নিলেন সাহিত্য সম্মেলনের। ১৯৩৮ থেকে ১৫ দিন অন্তর সাহিত্য সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হলো।

১৯৩৯ এ লাইব্রেরীতে এলেন বাংলার দু’জন মন্ত্রী শ্রীশচন্দ্র নন্দী (কর্মজীবন মন্ত্রিত্ব দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তীকালে তিনি কলিকাতা বঙ্গীয় পরিষদের সভাপতি হন) শ্রীনলিনীরঞ্জন সরকার। ১৯৩৯ এর উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো জুলাইতে অনুষ্ঠিত ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী । তখন সর্বমোট ৬৪ টাকা দশ আনা পাঁচ পাই ব্যয়ের এ অনুষ্ঠানে কোলকাতা থেকে আসেন সাহিত্যিক পরিমল কুমার গোস্বামী এবং বিভুতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়। বিয়াল্লিশে ১ আগষ্ট থেকে অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরী, রবীন্দ্র পরিষদ, পাবনা সাহিত্য চক্র ও পূর্ণিমা সম্মেলনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় টাউন হলে সপ্তাহব্যাপী প্রথম রবীন্দ্র মৃত্যু বার্ষিকী উদযাপিত হয়। এ অনুষ্ঠানমালায় ৮টি বিষয়ের উপর প্রবন্ধ রচিত হয়। এর ছয়টি অধিবেশনের শ্রীহিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় আই. সি. এস. সভাপতিত্ব করেন। তিনি নিজেও এ সময় দু’দিনব্যাপী রজনীকান্ত সেনের মৃত্য বার্ষিকীতে প্রবন্ধ পাঠ করেন। এ বছরই প্রথম প্রতি রোববার বিবেল তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত মহিলাদের জন্যে পাঠকক্ষ খোলার ব্যবস্থা গৃহীত হয়। বিয়াল্লিশের দিনগুলি এখনো অনেকের কাছে স্মরণীয়। এ সময় সংবাদপত্রের উপর বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়।

১৮৯০ সালের প্রতিষ্ঠাকালের বহু পুরাতন ভবন ব্যবহার অনুপযোগী এবং জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে লাইব্রেরীটি রক্ষা করতে এর অতীত ঐতিহ্য ধরে রাখতে বই-পুস্তক নষ্টের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং পাঠকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করে লাইব্রেরীর তৎকালীণ কর্তৃপক্ষ এগুলি রক্ষা করতে স্কয়ারের তৎকালের চেয়ারম্যান জনাব স্যামসন এইচ চৌধুরীকে অনুরোধ জানানো হয়। স্কয়ার কর্তৃপক্ষ পুরাতন এই প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে শেষ পর্যন্ত ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ৪ বছর ধরে ভৌতগত অবকাঠামোর নির্মাণ কাজটি সম্পন্ন করে দেন। ফলে লাইব্রেরীটি দেশের মধ্যে বেসরকারী সকল লাইব্রেরীর মধ্যে শ্রেষ্ঠতম প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়। বর্তমানে যথেষ্টগুণে উপযুক্ত ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে শক্তি শালী ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি নির্বাহী পরিষদ লাইব্রেরীর সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এই পরিষদের সভাপতি বিশিষ্ট ব্যক্তি মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক (অবৈতনিক) আব্দুল মতীন খান।