Services

এখানে সপ্তাহের ৬ দিনের প্রতিদিনই সকাল ১০-০০টা থেকে রাত ৮-০০টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে শতশত সংবাদপত্র পাঠক, শিক্ষার্থী, অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাধারণ ব্যবসায়ীসহ সব পেশার পাঠকেরা পড়াশোনা করে এবং বিভিন্ন গবেষকেরা গবেষণা কার্যক্রমও চালায়।

 
লাইব্রেরীতে সর্বমোট ৩টি পাঠ কক্ষ রয়েছে। এখানে সকল শ্রেণীর বয়স ও পেশার পাঠক তাঁদের ইচ্ছানুয়ায়ী বই, পুস্তক, পত্র-পত্রিকা / ম্যাগাজিন পড়তে পারেন। তবে দ্বিতল ভবনে মূল লাইব্রেরী। এখানে সব শ্রেণির পাঠক, গবেষক তাঁদের ইচ্ছানুযায়ী বই সংগ্রহ করে পাঠ করতে পারেন। সেই সাথে এই তলাতেই শিশুদের পড়ার জন্য আলাদা পাঠকক্ষ রয়েছে এবং তাদের বইয়ের শেলফও আলাদা করে রাখা হয়েছে। ভবনের তিনতলাতে একমাত্র পত্রিকা পাঠকদের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেখানে বসে পাঠ কক্ষ সবার জন্য উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বই,ম্যাগাজিন ও পত্রপত্রিকা বিন্যাস রয়েছে, যাতে করে পাঠক তাদের চাহিদানুয়ায়ী নিয়ে পড়তে পারেন ৪টি বিভাগে মোট আসন সংখ্যা ১৭০ টি।
এই লাইব্রেরীতে বিভিন্ন প্রকার রেফারেন্স সামগ্রী বেশ কয়েকটি শেলফে আলাদাভাবে সাজানো রয়েছে। এক্ষেত্রে গবেষকদের চাহিদানুয়ায়ী অনুযায়ী বই বা তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করা হয়ে থাকে। যদি গবেষকের চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করা সম্ভব না হয় তবে তাঁর চাহিদা পূরণের জন্য যথাযথ দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। রেফারেন্স সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রন্থাগার সামগ্রী ও গ্রন্থাগার ব্যবহারকারীর মাঝের দূরত্ব কমিয়ে আনা হয়।
প্রয়োজনীয় বই যাতে পাঠক অধিক সময় ধরে শিক্ষা বা গবেষণা কাজে ব্যবহার করতে পারে সেই জন্য গ্রন্থাগারে “সদস্য কার্ডের” মাধ্যমে বই ধার দেয়া হয়। এই লাইব্রেরীতে আজীবন এবং ‘ক’ শ্রেণীর সদস্যগণ ২টি, ‘গ’ শ্রেণীর সদস্য ও সাধারণ সদস্য ১টি করে বই ৭ দিনের জন্য ধার নিতে পারেন।
অনেক সময় ব্যবহারকারীদের একটি গ্রন্থর কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশের দ্রুত প্রয়োজন হতে পারে, যা তাৎক্ষণিকভাবে লাইব্রেরী থেকে ইস্যু করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ঐ বইয়ের প্রয়োজনীয় অংশটুকু পাঠক ফটোকপি করে নিতে পারেন। তবে বইটি যদি পুরাতন হয় এবং ফটোকপি করার ক্ষেত্রে বইয়ের কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে -সেক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে নিজ হাতে লিখে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এক্ষেত্রে লাইব্রেরীতে নিজস্ব কোন ফটোকপি মেশিন না থাকায় লাইব্রেরীর নিজস্ব কর্মচারী দ্বারা বাইরে থেকে ফটোকপি করে সরবরাহ করা হয়্। তেমনি ভাবে পুরাতন পত্রিকার প্রয়োজনীয় অংশও ফটোকপি করে প্রদান করা হয়।
একজন পাঠক ও গবেষকের পক্ষে তার নিজস্ব বিষয়ের সকল ও সাম্প্রতিক তথ্য সম্পর্কে অবহিত হওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে সাম্প্রতিক তথ্য সম্বলিত পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও পুস্তকাদি আলাদা করে ব্যবহারকারীদের জন্য সহজলভ্য করে রাখা হয়। এর মাধ্যমে লাইব্রেরীতে সংগৃহীত সকল নতুন তথ্য সম্পর্কে ব্যবহারকারীরা জানতে পারেন। এ ধরনের তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করা হয়।
লাইব্রেরীতে একজন পাঠক অথবা একজন গবেষক তথ্য খোঁজার জন্য শতকরা ৬৫ ভাগ এবং পড়ার জন্য শতকরা ৩৫ ভাগ সময় ব্যয় করেন। তাই ব্যবহারকারীদের সময়ের মূল্য দিয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে তার প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সংগ্রহ করে একত্রে উপস্থাপন করা হয়।
অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরী শত বর্ষের পুরাতন হলেও আধুনিক লাইব্রেরীর মতো পরিচালনা কাঠামো এখনও গড়ে উঠেনি। ২০০৮ সাল হতে লাইব্রেরীটিকে ডিজিটাল লাইব্ররী হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর ফলে লাইব্রেরীতে কম্পিউটার পদ্ধতির মাধ্যমে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার প্রাথমিক পদক্ষেপ শুরু করা হয়।পদ্ধতিকে আধুনিক ও যুগপোযোগী করে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরীতে তিন ধরনের সদস্য লাভের সুযোগ আছে। প্রথমতঃ রয়েছে ‘আজীবন’ সদস্য । বর্তমানে আজীবন সদস্য সংখ্যা ১৬০ জন তবে যে কোন ব্যক্তি এক লাখ টাকা প্রদান করে আজীবন সদস্য হতে পারবেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে ‘ক’ শ্রেণী সদস্য । এ ধরনের সদস্য সংখ্যা মাত্র ৬২ জন । তবে ‘ক’ শ্রেণীর সদস্যপদ বর্তমানে স্থগিত রাখা হয়েছে। তৃতীয় ধরনের সদস্যপদের নাম ‘সাধারণ সদস্য’ । বর্তমানে এ ধরনের সদস্য সংখ্যা ১২০ জন। সাধারণতঃ সাধারণ সদস্য হতে হলে স্থানীয় ব্যক্তি হতে হবে। অবশ্য কোন ধরনের শিক্ষার্থীকে লাইব্রেরীর সদস্য করা হয় না । তবে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে লাইব্রেরী চলাকালীন সময়ে অবাধে পড়াশুনা বা তাদের প্রয়োজনীয় নোট করার সুবিধা রাখা হয়েছে। এর জন্য তাদের কোনরূপ আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন হয় না।